ইসলামিক ব্যাংকিং এর পক্ষে-বিপক্ষের আলোচনাটা হয় মূলত তিনটা লেয়ারে…
একটা পক্ষের বক্তব্য হচ্ছে, বিদ্যমান ব্যবস্থায় ইসলামি ব্যাংকিং করাই সম্ভব না। পরের লেয়ারে একটা পক্ষ মনে করে ইসলামি ব্যাংকিং এর যেই মডেল কিংবা প্রিন্সিপালগুলো আছে এগুলো ঠিক নেই। যারা মনে করেন এই মডেলগুলো ঠিক আছে তাদের একটা পক্ষের অভিযোগ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ব্যাংকগুলো প্রিন্সিপাল বা মডেলগুলো প্রোপারলি মেইনটেন করে না।
–
যারা ইসলামিক ব্যাংকিং এর বিরোধিতা করেন, তাদের কেউ কেউ ফাইন্যান্স অথবা কেউ কেউ ইকোনমিকস এ যোগ্যতা রাখেন। কেউ কেউ শারীয়াহতে। একই সাথে শারীয়াহ এবং ফাইন্যান্সের ডিপ আন্ডারস্ট্যান্ডিং আছে এই পক্ষের মাঝে এমন ব্যক্তির সংখ্যা সিগ্নিফিকেন্ট না। পাশাপাশি তাদের কোনও ফোরাম অথবা প্রতিষ্ঠান নেই যেখানে দুই ফিল্ডের এক্সপার্টরা বসে নলেজ এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে কাজ করেন, সিদ্ধান্ত নেন।
–
যেই পক্ষ ইসলামিক ব্যাংকিং এর পক্ষে বলেন। তাদের মাঝে একই সাথে ইসলামি শারীয়াহ এবং ফাইন্যান্সের আন্ডারস্ট্যান্ডিং এবং একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড আছে এমন ব্যক্তির সংখ্যা অনেক। পাশপাশি AAOIFI, IFSB এর মতো একাধিক প্রতিষ্ঠান আছে। যেখানে ফাইন্যান্স এক্সপার্টস, শারীয়াহ এক্সপার্টস এবং একই সাথে শারীয়াহ ও ফাইন্যান্সের একাডেমিক আন্ডারস্ট্যান্ডিং রাখেন, এমন ব্যক্তিরা কলাবরেটিভলি কাজ করেন।
–
ইসলামিক ব্যাংকিং এর বৈধতা শুধু মুফতি তাকি উসমানি দেননি বরং কাতার, বাহরাইন, সৌদি, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের উল্লেখযোগ্য আলেমরা ইসলামিক ব্যাংকিং নিয়ে কাজ করছেন। প্রতিবছর একাধিক ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স আয়োজন হচ্ছে ইসলামিক ব্যাংকিং এর ডেভেলপমেন্টের জন্য।
–
সাম্প্রতিক সময়ে কেউ কেউ বলেন, কনভেনশনাল ব্যাংকগুলোর যারা এথিকাল ব্যাংকিং প্র্যাক্টিস করে, সেসব ব্যাংক ইসলামি ব্যাংক থেকে বেশি এথিক্যাল এবং এ নিয়ে তাদের মাঝে আক্ষেপ কাজ করে। ইনসিএফের ড. যিয়াদ মুহাম্মাদও আমাদের ক্লাসে এমনটা বলেছিলেন। ডিটেলস বোঝার জন্য আমি তাকে প্রশ্ন করেছিলাম। তার ব্যাখ্যার সামারি হচ্ছে এথিক্যাল ব্যাংকগুলো কঞ্জুমার রাইটস এবং সাস্টেইনেবিলিটি (ইন টার্মস অব রেস্পন্সিবিলিটি, এনভায়রনমেন্ট) এর জায়গা থেকে ইসলামি ব্যাংকগুলোর থেকে এগিয়ে। এর সাথে ইসলামি ব্যাংকের মডেল সঠিক বা বেঠিক, বিদ্যমান ব্যবস্থায় ইসলামি ব্যাংক পরিচালনা সম্ভব-অসম্ভব এসব আলাপের সম্পর্ক নাই। এথিক্যাল ব্যাংকিং এর প্যারামিটারগুলো বুঝলে এটা বোঝা সহজ হবে।