কয়েকদিন আগে এক সেমিনারে প্রফ জাসের আউদা ওয়াকফ নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। তিনি মনে করেন ওয়াকফ ইসলামি অর্থনীতির অন্যতম প্রিন্সিপাল। ওয়াকফকে শুধুমাত্র ফিলান্থ্রপির জায়গা ব্যাখ্যা না করে তিনি বরং এটাকে মুসলিম সিভিলাইজেশনের মেরুদণ্ড হিসেবে দেখেন। আজহারের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে স্কলারদের স্বাধীনভাবে মতামত দেওয়ার ব্যাপারেও ওয়াকফ কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটাও তুলে ধরেন।
.
মুসলিম সিভিলাইজেশনের অনেক উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠান ওয়াকফ ভিত্তিক ছিলো। বাগদাদের দারুল হিকমাহ থেকে শুরু করে পরবর্তী সময়ে আল-আজহার। শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা গবেষণাগারই নয়, বরং হাসপাতাল কিংবা লাইব্রেরি— মুসলিম সিভিলাইজেশনে এধরণের সব প্রতিষ্ঠানই ছিলো ওয়াকফ ভিত্তিক।
.
বিভিন্ন দেশে ওয়াকফ নিয়ে নানাভাবে কাজ করা হচ্ছে। কুয়েত, সৌদি, মালয়েশিয়া, সুদান, ইন্দোনেশিয়া-সহ অন্যান্য দেশে ওয়াকফ ভিত্তিক নানান উদ্যোগ এবং প্রতিষ্ঠান আছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ওয়াকফ ভিত্তিক হোটেল, ক্লিনিক, আবাসন, অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, ট্রেইনিং সেন্টার এমনকি স্টার্টআপ এক্সেলেরেটর প্রোগ্রাম পর্যন্ত। নিউজিল্যান্ড, সিঙ্গাপুরের অমুসলিম প্রধান দেশগুলোতেও ওয়াকফ ভিত্তিক মসজিদ, স্কুল, দাওয়াহ সেন্টার গড়ে উঠছে।
.
গত সেমিস্টারে এক ভাই বাংলাদেশের ওয়াকফ নিয়ে তার মাস্টার্সের থিসিস করেছিলেন। সে সময়ে তিনি বিভিন্ন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন। খুব সাধারণ কিছু প্রশ্নের উত্তরও তিনি ওয়াকফ প্রশাসনের কাছ থেকে পাননি। ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ওয়াকফ নিয়ে একটা সার্ভে করে। বাংলাদেশে ওয়াকফ নিয়ে যে কয়টা পেপার পড়েছি, অধিকাংশ পেপারেই এই এক সার্ভেকেই রেফার করা হচ্ছে। ডক্টর ফয়সাল খান ২০১০ সালে তার এক কনফারেন্স পেপারে ১৯৮৬ সালের সেই সার্ভেকেই ওয়াকফ নিয়ে প্রথম এবং শেষ সার্ভে হিসেবে উল্লেখ করেন। ওই সার্ভের হিসেবে বাংলাদেশে ওয়াকফ প্রোপার্টির সংখ্যা দেড় লাখেরও বেশি।
.
একেকটা ওয়াকফের মাঝে পুরো কমিউনিটির চিত্র বদলে দেওয়ার সম্ভাবনা আছে। দরকার শুধু সঠিক ব্যবহার। বাংলাদেশে ওয়াকফ স্টেটগুলো নিয়ে সরকার সিরিয়াস হবে— নিকট ভবিষ্যতে এমন সম্ভাবনা দেখি না। বেসরকারি উদ্যোগ এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর রোল এক্ষেত্রে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। ওয়াকফের সাথে যাকাত, কর্যে হাসানাহ সহ অন্যান্য ইনস্ট্রুমেন্ট ইন্টিগ্রেট করে বিভিন্ন হাইব্রিড মডেল নিয়েও ভাবতে হবে।
ওয়াকফ: মুসলিম সিভিলাইজেশনের মেরুদণ্ড এবং বাংলাদেশে এর সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ
কয়েকদিন আগে এক সেমিনারে প্রফ জাসের আউদা ওয়াকফ নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। তিনি মনে করেন ওয়াকফ ইসলামি অর্থনীতির অন্যতম প্রিন্সিপাল। ওয়াকফকে শুধুমাত্র ফিলান্থ্রপির জায়গা ব্যাখ্যা না করে তিনি বরং এটাকে মুসলিম সিভিলাইজেশনের মেরুদণ্ড হিসেবে দেখেন। আজহারের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে স্কলারদের স্বাধীনভাবে মতামত দেওয়ার ব্যাপারেও ওয়াকফ কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটাও তুলে ধরেন।.মুসলিম