Untitled-1
Osama Adnan

Osama Adnan

তারুণ্যের অলসতা: কারণ

বর্তমান সময়ে তরুণদের নিয়ে আলোচনা করার সময় যেই ইস্যুকে অনেকেই সামনে রাখেন, তা হলো তরুণরা অলস। তারুণ্যের উর্বর সময়টাকে এরা অবহেলায় পার করছে। প্রশ্ন উঠে চারপাশে স্কিল ডেভেলপমেন্টের এতো এতো রিসোর্স, এতো এতো মটিভেশনাল কন্টেন্ট এরপরেও কেন তারা এসবের ব্যবহার করছে না? বিপরীতে যদি এই প্রশ্ন করা হয়, একজন তরুণ কেন এই রিসোর্সগুলো কে প্রোপারলি ইউটিলাইজ করবে? আপনি যখন রাস্তায় নামবেন, আপনার যদি কোনো গন্তব্য না থাকে তাহলে রাস্তার খালি রিকশা, বাইক, বাস কিংবা লেগুনা কিছুই মেক সেন্স করে না। কারণ আপনি এটাই জানেননা যে আপনি কোথায় যেতে চান। এখানেও বিষয়টা ঠিক এমনই।

আমার কাছে মনে হয় এই সিনারিওটা একটা প্রব্লেমের রেজাল্ট। তরুণদের অনেকের মাঝেই তাদের ক্যারিয়ারের কোনো গোল নাই। ফলে তার কাছে কোনো ক্যারিয়ার প্লানও নাই। সে জানে না সে কী হবে। আজ থেকে পাঁচ বছরপর সে কোন জায়গাতে থাকবে। ভাবছে এক্স ওয়াই যেড থেকে কিছু একটা হয়ে যাবে। আবার অনেকেই নিজের উপর প্রচন্ড হতাশা নিয়ে থাকে। মুটামুটি এক প্রকার ভেবেই রাখে, যে তাকে দিয়ে কিছু হবে না।

প্রচলিত কালচারে বলা যায় আমাদের আয়ুর প্রায় এক তৃতীয়াংশ সময় চলে যায় পড়াশোনায়। সাধারণত এর উপরেই নির্ভর করে পরবর্তী জীবন কেমন হবে। কারও যখন ক্যারিয়ার গোল ডিফাইন করা থাকবে, তখন সে প্লানিং করবে যে কীভাবে কী করলে এই গোল এচিভ করা যাবে। তখন সে নিজেকে তার জন্যে যোগ্য করে তুলবে। রোডম্যাপটাকে সাজাবে। প্রয়োজনীয় যা যা পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন সে তা তাই নিবে। সে নিজেকে ভবিষ্যতের একটা অবস্থানে কল্পনা করতে পারবে। সে স্বপ্ন দেখবে, এই স্বপ্ন তাকে এগিয়ে নিবে। এটা সেলফ মটিভেশনের অনেক বড় একটা সোর্স।

প্রতিটা মানুষের জীবনে খুব অভিয়াস একটা বিষয় হচ্ছে তাকে দায়িত্ব নিতেই হবে। এ থেকে সে কোনোভাবেই মুক্তি পাবে না। অন্য কোনো দায়িত্ব যদি নাও নেয়, অন্তত রিজক অন্বেষণ, নিজের পরিবারের দায়িত্ব তো তাকে নিতেই হবে। সন্তান, স্ত্রী, বাবা-মা। প্রতিটা মানুষ এমন এক নিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকেই যায়। অথচ এ নিয়ে অনেকের পরিকল্পনা থাকে না। সে কী করবে তা স্পষ্ট না। ক্যারিয়ার নিয়ে আজকের অবহেলা আগামীদিনে রিযক অন্বেষণের সম্মানজনক উপায়ের মাঝে বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে।

প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই ক্যারিয়ার গোল ঠিক করে ফেলা প্রয়োজন। এরপর তা এচিভ করার জন্যে প্রোপার প্লানিং। লাইফ অবশ্যই ক এর পরে খ, খ এর পর গ এসব নিয়ম মেনে সবসময় চলে না। তবে অন্তত কয়েকটা প্রশ্নের উত্তর স্পেসিফিক থাকা প্রয়োজন। আমি কী করছি, কেন করছি, কীভাবে করছি !!!

চাকরি নাকি ব্যবসা? ব্যবসা হলে কেমন ব্যবসা, তার জন্যে কী কী প্রস্তুতি নিতে হবে, এখন থেকে কীভাবে কী করতে হবে ঠিক করে ফেলা প্রয়োজন। চাকরি হলে কেমন চাকরি, কীভাবে কী প্রস্তুতি নিতে হবে। পরিকল্পনা করে কাজ শুরু করে দিতে হবে সাথে দুআ আর তাওয়াক্কুল। পরবর্তী যাত্রাকে সহজ করতে।

Share this post

আরও পড়ুন...

ওয়াকফ: মুসলিম সিভিলাইজেশনের মেরুদণ্ড এবং বাংলাদেশে এর সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ

কয়েকদিন আগে এক সেমিনারে প্রফ জাসের আউদা ওয়াকফ নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। তিনি মনে করেন ওয়াকফ ইসলামি অর্থনীতির অন্যতম প্রিন্সিপাল। ওয়াকফকে শুধুমাত্র ফিলান্থ্রপির জায়গা ব্যাখ্যা না করে তিনি বরং এটাকে মুসলিম সিভিলাইজেশনের মেরুদণ্ড হিসেবে দেখেন। আজহারের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে স্কলারদের স্বাধীনভাবে মতামত দেওয়ার ব্যাপারেও ওয়াকফ কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটাও তুলে ধরেন।.মুসলিম

Read More »

দুনিয়া চলার নীতি

জগৎ-দুনিয়া, সমাজ-রাজনীতি এসবের কিছু ইউনিভার্সাল ল আছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কিংবা একাডেমিক বই এগুলো শেখাতে পারে না। ফলে প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে কোয়ালিফাইড এমন অনেকেরও এই ইন্টিলিজেন্সে ঘাটতি থাকে। দুইটা ফ্যাক্ট থেকে তৈরি হওয়া পার্সেপশনকে তৃতীয় আরেকটা ফ্যাক্ট বানিয়ে ব্যাখ্যা করে। কারও যখন এই ইন্টিলিজেন্স ছাড়াই ফ্যান বেইজ তৈরি হয়। তখন সে নিজেও অল্পতে

Read More »

দেশে নানান সমস্যা- সমাধান কি বিদেশ?

কেউ যদি মনে করে দেশে নানান সমস্যা। এসব পাল্টানোর মতো হ্যাডম তার নাই। সো, সে বিদেশ চলে যাবে। সিম্পল একটা লাইফ লিড করবে। এটা তার ব্যক্তিগত চিন্তা এবং পরিকল্পনা সে এভাবে ভাবতেই পারে। তবে তার এটা মাথায় রাখা উচিত যে তার হ্যাডম নাই অথবা সে এটেম্প নেয় নাই। অতএব এখানে

Read More »
Scroll to Top