Untitled-1
Osama Adnan

Osama Adnan

উচ্চশিক্ষা: এক্সপেক্টেশন ভার্সেস রিয়েলিটি – পর্ব ১

বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ উচ্চশিক্ষাকে নেহাত টাকা কামাইয়ের মাধ্যম মনে করে। অনেকে আবার মনে করে পাশ করে সার্টিফিকেট দেখিয়েই চাকরি পাওয়া যাবে। চাকরি-বাকরির সাথে তার ডিগ্রির কী সম্পর্ক, কীভাবে কী প্রস্তুতি নেবে এসবে বিশেষ মনোযোগ দেয় না। পাশ করার পরে যখন কোথাও চাকরি-বাকরি হয় না আবার দেখে অমুক ফ্রিল্যান্সিং করে এত টাকা কামাচ্ছে তখন সে তার ডিগ্রিকে গালি দেয়। আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে এই দুইটা চিন্তা আর একটা কর্মপন্থা সবগুলোকেই ভুল মনে হয়।

আমরা সাধারণত লাইফের যে স্টেজে এসে উচ্চশিক্ষা নিই এটা লাইফের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা সময়। এই সময়ে ফুলটাইম কোনো কিছুর সাথে চার থেকে পাঁচ বছরের জন্যে এনগেজ হওয়ার পূর্বে এর পারপাস, এক্সপেক্টেশন ও রিয়েলিটির ক্যালকুলেশন পরিষ্কার হয়ে নেওয়া অনেক বেশি জরুরি।

নেহাত টাকা কামাইয়ের মাধ্যম হিসেবে উচ্চশিক্ষা মোটেও ভালো কোনো অপশন না। উচ্চশিক্ষা কখনো কাউকে টাকা কামাই করা শেখায় না। জেনারেলি এটা নলেজ প্রোভাইড করে, কখনো কখনো দক্ষতাও। বিষয়ভেদে সেই নলেজ বিক্রি করে টাকা কামাইয়ের সুযোগ কম-বেশি হয়। এই নলেজকে ‘সেলএবল’ করাটাও ভিন্ন আরেক দক্ষতা। তবে যেটা কমন থাকে তা হলো কেউ প্রোপারলি এই জার্নির মধ্য দিয়ে গেলে তার মাঝে কিছু কোয়ালিটি ডেভেলপ করে। ব্যাতিক্রম বাদ দিলে, সাধারণত যারা এই জার্নির ভেতর দিয়ে যায় না, অথবা প্রোপারলি এই জার্নি করে না তাদের মাঝে এই কোয়ালিটিগুলো থাকে না।

বাংলাদেশে অধিকাংশ শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময় বুকভরা ফ্যান্টাসি নিয়ে ভর্তি হয়। বড় একটা অংশই অবগত থাকে না তার ডিগ্রির সাথে কোন চাকরির কী সম্পর্ক, সে এই ডিগ্রি দিয়ে কী চাকরি পাবে। যতদিনে অবগত হয় ততদিনেও অনেকে সিরিয়াস হতে পারে না। এভাবে চার-পাঁচ বছর চলে যায়। সে তার পুরো ডিগ্রিকেই অনর্থক মনে করে।

এই শ্রেণির বড় একটা অংশই যখন পাশ করার পর দেখে তারই কোনো বন্ধু কিংবা চেনাজন ফ্রিল্যান্সিং করে “লাখ-লাখ টাকা” কামাচ্ছে সে হতাশ হয়ে পরে। নিজের ডিগ্রিকে গালি দেওয়ার শক্ত যুক্তি খুঁজে পায়। অথচ বিপরীতে সে একজন “সফল ফ্রিল্যান্সার” এর কয়েকবছরের ত্যাগ, পরিশ্রম দেখে না। দেখে না গত চার-পাঁচ বছরে চাকরির জন্যে তার প্রস্তুতি কেমন ছিল।

এদের ভিড়েও একটা অংশ দেখা যায়, যারা পাশ করে চাকরি না পেলেও নিজের ডিগ্রিকে গালি দেয় না। সে একটা স্বপ্ন লালন করে। তা বাস্তবায়নে কাজ করে যায়। আত্মবিশ্বাসী থাকে।

Share this post

আরও পড়ুন...

মালয়েশিয়ার সেলাঙ্গর রাজ্যে যাকাত যেভাবে বণ্টন করা হয় – ইসলামিক সৌশাল ফাইন্যান্স কেইস স্টাডি ২

আমরা যখন যাকাত নিয়ে কথা বলি, তখন আমাদের মনে প্রথমেই আসে ধর্মীয় দায়িত্ব। প্রতিবছর কিছু অর্থ দান করি, গরীব-দুঃখীদের সাহায্য করি—ব্যস, কাজ শেষ। কিন্তু মালয়েশিয়ার সেলাঙ্গর রাজ্য যাকাতের পুরো বিষয়টাকেই ম্যানেজ করছে ভিন্নভাবে। সেখানে যাকাত মানে একটা সম্ভাবনার শুরু। সেখানে যাকাত মানে সহানুভূতির পাশাপাশি পরিকল্পনা। আর এর পেছনে যে প্রতিষ্ঠানটা

Read More »

ডমপেট দুআফার ওয়াকফ ম্যানেজমেন্ট – ইসলামিক সৌশাল ফাইন্যান্স কেইস স্টাডি ১

আমরা যখন ওয়াকফের কথা ভাবি, তখন হয়তো শত বছর আগে তৈরি কোনো মসজিদ বা মাদ্রাসার ছবি আমাদের চোখে ভেসে ওঠে। কিন্তু ইন্দোনেশিয়ার ইসলামী দাতব্য সংস্থা ডমপেট দুআফা (Dompet Dhuafa) এই ধারনাটিকে আধুনিক রূপ দিয়ে বাস্তবে মানুষের জীবন বদলে দিচ্ছে—আর তাদের কাজগুলো সত্যিই অনুপ্রেরণামূলক। ওয়াকফ কী? সহজভাবে বললে, ওয়াকফ হলো ইসলামী

Read More »
Scroll to Top