দেশের প্রথম অনলাইন ফুড ডেলিভারি সার্ভিস কোম্পানি “হাংরিনাকি” বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কেবল কেউ মার্কেটে প্রথম অপারেশন শুরু করলে অর্থাৎ মার্কেট স্টার্টার বা পায়োনিয়ার হলেই সে দীর্ঘদিন টিকে থাকবে অথবা মার্কেট লিডার হবে এমনটা নয়। কারণ কেউ মার্কেট লিডার হবে কি না হবে এটা কেবল শুরু করার উপর নির্ভর করে না, বরং মার্কেট ক্রিয়েট করার উপর। একটা মার্কেটের শুরুর দিকে সে-ই মার্কেট লিডার হয়, যে মার্কেট ক্রিয়েটর হয়। অর্থাৎ যে মার্কেটকে তৈরি করে, কঞ্জুমারদের বিহ্যাভিওরে চেঞ্জ আনে। এখন সে কতদিন পর্যন্ত লিডার থাকবে এটা নির্ভর করে তার হলেস্টিক এপ্রোচের উপর। ইনোভেশন, লিডারশিপ আর অপারেশনাল এক্সিলেন্সির উপর।
সিটিসেল এবং জিপির কথাই চিন্তা করুন। বাংলাদেশের বাজারে প্রথম টেলকো হলো সিটিসেল। সিটিসেলের অনেক পরে জিপির আগমন হয়েছে। কিন্তু মার্কেট লিডার হয়ে গেলো জিপি এবং একটা সময় সিটিসেল বন্ধই হয়ে গেলো।
হাংরিনাকি বন্ধের পেছনে মোটাদাগে কয়েকটা কারণ বলা যেতে পারে –
১. আজ থেকে ১০ বছর আগে যখন হাংরি নাকি ব্যবসা শুরু করে তখন মানুষ যেকোনো প্রকার অনলাইন সার্ভিসের সাথেই এতো বেশি ইউজড টু ছিল না। হাংরিনাকির সামনে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল এই রেজিস্ট্যান্সকে ওভারকাম করা, মানুষের বিহ্যাভিওর চেঞ্জের মাধ্যমে। কিন্তু তারা তা পারেনি। যে কোনো মার্কেটারের জন্যই এটা বড় একটা চ্যালেঞ্জ।
২. হাংরিনাকির বয়স দশ বছর হলেও বড় একটা সময় বলা যায় তারা হাইভারনেশন মুডে ছিল। তাদের তেমন কোনো মার্কেটিং এক্টিভিটিস চোখে পরেনি।
৩. কভিড-১৯ এর সময়টা বলা যায় অনলাইন সার্ভিসের জন্য বুমিং টাইম। কঞ্জুমার বিহ্যাভিওরটা র্যাপিডলি চেঞ্জ হয় এই পিরিয়ডে। কিন্তু এই সুযোগটাকেও তারা সেভাবে লুফে নিতে পারেনি, কারণ তাদের স্ট্রং কোনো প্রেজেন্স ছিল না।
৪. ইনোভেটিভ কোনো স্টার্টাপের ক্ষেত্রে কন্সিসট্যান্ট এফোর্টের বিষয়টা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আপনি জানেন না কবে মার্কেট চেঞ্জ হবে। বাট এরপরেও লেগে থাকতে হবে। সাকসেস এবং ফেইল করা, দুই সম্ভাবনা নিয়েই। তবে এর বাহিরেও কিছু বিজনেসের ক্ষেত্রে এটা প্রেডিক্ট করা যায়, মার্কেট একটা সময় পরে চেঞ্জ হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। তাই সময়োপযোগী প্লান এবং একশন নিয়ে মার্কেটে এক্সিস্ট করাটা গুরুত্বপূর্ণ। সম্ভবত হাংরিনাকি তা করতে পারেনি।